কুরআন - 2:8 সূরা আল-বাকারা অনুবাদ, লিপ্যন্তরণ এবং তাফসীর (তাফসীর).

وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يَقُولُ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ وَبِٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِ وَمَا هُم بِمُؤۡمِنِينَ

অনুবাদ -

মানুষের মধ্যে কিছু লোক আছে [23], যারা বলে, আমরা আল্লাহ ও কিয়ামতের দিনের প্রতি ঈমান এনেছি, অথচ তারা প্রকৃত মুমিন নয় [24]।

সূরা আল-বাকারা আয়াত 8 তাফসীর


📖 সূরা আল-বাকারা - আয়াত ৮ এর ব্যাখ্যা

মানুষের মধ্যে কিছু লোক আছে [23], যারা বলে, আমরা আল্লাহ ও কিয়ামতের দিনের প্রতি ঈমান এনেছি, অথচ তারা প্রকৃত মুমিন নয় [24]।

✅ [23] মানবজাতির তিনটি দৃশ্যমান ও একটি গোপন দল

মানবজাতিকে মূলত তিনটি স্পষ্ট শ্রেণিতে ভাগ করা যায়:
মুমিন — যাদের মুখে এবং অন্তরে উভয় জায়গায় ঈমান প্রতিষ্ঠিত।
কাফির — যারা প্রকাশ্য ও গোপনে ঈমান অস্বীকার করে।
মুনাফিক — যারা মুখে ইসলামকে স্বীকার করে, কিন্তু অন্তরে কুফর লুকিয়ে রাখে।

এই মুনাফিকরা সবচেয়ে বিপজ্জনক ও ঘৃণিত, কারণ তারা বাহ্যিকভাবে ইসলাম গ্রহণের ভান করে, অথচ আসল উদ্দেশ্য ইসলাম ধ্বংস করা। তাদের উদাহরণ হলো ইবলীস, যে হযরত আদম (আঃ)-এর কাছে বন্ধু সেজেছিল, অথচ গোপনে ছিল শত্রু। কুরআনে বলা হয়েছে:
আর সে উভয়কে শপথ করে বলল, ‘আমি তোমাদের জন্য একজন শুভানুধ্যায়ী।’ (সূরা আরাফ ৭:২১)

এই আয়াতটি মুমিন ও কাফিরদের আলোচনা শেষ করে তৃতীয় ও সবচেয়ে খারাপ দল — মুনাফিকদের পরিচয় তুলে ধরে, যারা ইসলামি চেহারা পরিধান করে, কিন্তু অন্তরে কুফর লালন করে।

একটি চতুর্থ, গোপন দলও রয়েছে: যারা অন্তরে ঈমান রাখে, কিন্তু প্রাণসংকট বা ভয়ংকর জুলুমের কারণে প্রকাশ করতে পারে না। এরকম চরম পরিস্থিতিতে মুখে কুফরি বললেও, যদি হৃদয়ে ঈমান অটল থাকে, তবে আল্লাহর দৃষ্টিতে তারা অপরাধী নয়

আল্লাহ বলেন:
“সে ব্যক্তি ব্যতীত, যাকে বাধ্য করা হয়েছে এবং তার হৃদয় ঈমানে স্থির।” (সূরা নাহল ১৬:১০৬)

এমন পরিস্থিতিতে ঈমান রক্ষার জন্য হিজরত অপরিহার্য হয়ে পড়ে।

✅ [24] তাদের ঈমানের দাবি প্রত্যাখ্যাত হয়

এই শ্রেণির মানুষদের মুমিন হিসেবে গ্রহণ করা হয় না, কারণ তাদের ঈমান কেবল মুখের কথা, অন্তরে তার কোনো অস্তিত্ব নেই।

তারা হয়তো আল্লাহ ও কিয়ামতের প্রতি বিশ্বাস করে, কিন্তু নবূওয়াতে বিশ্বাস না থাকলে ঈমান পূর্ণ হয় না এবং গ্রহণযোগ্য নয়।

ইবলীস একটি জীবন্ত উদাহরণ, যে অনেক বিষয়ে বিশ্বাস করলেও, নবীর আদেশ মানতে অস্বীকার করায় কুফরি তে পরিণত হয়

এটি একটি গভীর সতর্কবার্তা— যারা মুখে বিশ্বাসের দাবি করে, কিন্তু নবী মুহাম্মদ ﷺ-কে অস্বীকার করে বা বিরোধিতা করে, তাদের ঈমান অগ্রহণযোগ্য।

সত্যিকারের ঈমান তখনই সম্পূর্ণ হয়, যখন সমস্ত মূল আকীদা, বিশেষ করে নবূওয়াতে বিশ্বাস অন্তর্ভুক্ত থাকে।

Sign up for Newsletter

×

📱 Download Our Quran App

For a faster and smoother experience,
install our mobile app now.

Download Now